অনলাইন ডেস্ক: প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যশোর থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরে মোটরসাইকেলে বয়ে নিয়ে গিয়ে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেন ৪০ বছর বয়সি সংগ্রামী নারী বাইকার রত্না বেগম ।
রত্নার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় মা ও একমাত্র সন্তান নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন তিনি। ছেলের পড়ালেখার খরচসহ সংসারের খরচ জোগান দিতে তিনি হয়েছে নিজেই হয়েছেন বাইকার । রত্না বেগম যশোরের টালিখোলা এলাকার মৃত সিদ্দিক সরদারের মেয়ে।
রত্না বেগম জানান, মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিয়ে হয় যশোর সদর উপজেলার অ্যাড়েন্দা গ্রামে, ৮ বছরের ছেলে সন্তানকে রেখে স্বামী ছেড়ে চলে যায়। সেই থেকে যশোর শহরের টালিখোলায় একটি ভাড়া বাড়িতে এক সন্তান আর মাকে নিয়ে থাকছি।
জমি বলতে কিছু না থাকায় দিশেহারা হয়ে পরেন তিনি। কোন উপায় না পেয়ে বাড়ির পাশে গড়ে তুলেছেন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সেখানে তিনি গরুর মাথা ও ভুড়ি বিক্রি করেন।
এ ছাড়া যদি কেউ গরুর মাংসের অর্ডার করেন, তা হলে সেদিন গরু কিনে জবাই দিয়ে বিক্রি করেন।
রত্না আরো জানান, লাভের টাকা দিয়েই চলে মা আর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সংসার। এভাবেই চলছে ১৪ বছর ধরে রত্নার ব্যবসা। তার ছেলের বয়স এখন ১৯ বছর। তিনি যশোরের একটি পলিটেকনিক কলেজে ডিপ্লোমা করছেন।
কালীগঞ্জ নতুন বাজারের মাংস ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান জানান, গরুর ভুড়ি ও মাথা কিনে বাসে উঠিয়ে দিয়ে রত্না তার নিজের মোটর বাইকে চড়ে যশোর ফিরে যান।
আক্ষেপ করে রত্না বেগম বলেন, কালীগঞ্জে যাওয়া-আসার সুবাদে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই যুবক তার কোনো স্ত্রী ও সন্তান নেই জানিয়ে আমাকে বিয়ে করেন। পরে জানতে পারি তার স্ত্রী ও সন্তান সবই আছে। পরে আগের স্ত্রী ব্র্যাকের সালিশকেন্দ্রে অভিযোগ করেন।
বিচারে আমার স্বামীকে প্রথম স্ত্রীর ভোরণপোষণ বাবদ মাসে ৮ হাজার টাকা দেওয়ার রায় দেন। এ টাকা আমিই পরিশোধ করতাম। বর্তমানে আমার এই সামান্য ব্যবসা থেকে এত টাকার জোগান আর দিতে পারছি না। এখন তার সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি।
মতিহার বার্তা / ইএবি
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.